আমাদের মতো ক্ষুদ্র মানুষ গুলোর মনে আউটসোর্সিং নিয়ে তীব্র মতামত আছে।
কখনো কখনো আউটসোর্সিং নিয়ে এতটাই মাতামাতি হয় যা পরিস্থিতির অনুকূলে চলে যায়।
আউটসোর্সিং নিয়ে কিছু মিথ্যা তথ্য আমাদের কে এতটাই উদ্বিগ্ন করে তোলা যা কল্পনা শক্তিকেও হার মানায়।
কিন্তু কেন এরকম হয় তা বুঝা দরকার, আমাদের সমাজে এক শ্রেনীর অসাধু মানুষ আছে যারা নিজেদের বিত্ত গড়তে গিয়ে অন্যদের সমস্যায় ফেলতে দ্বিধা করি না।
আমি যেহেতু বাংলাদেশের লেখক, তাই আউটসোর্সিং এ বাংলাদেশের প্রেক্ষাপট নিয়েই আলোচনা করবো।
বাংলাদেশে আউটসোর্সিং নিয়ে প্রতারণা ও আউটসোর্সিং এর সাফল্য নিয়ে আজকের আলোচনা শেষ করবো।
আমাদের দেশের অসাধু ব্যক্তিগণ এতটাই দূরদর্শী, প্রযুক্তি স্বনির্ভর ব্যক্তিগুলোকে হাতের মুঠোয় বন্ধ করে রাখতে চায়।
এদের প্রধান টার্গেট তরুণ সমাজ ও বেকার মানুষ গুলোকে অতি লোভনীয় অফারের মাধ্যমে টাকার বিনিময়ে কাজ পায়ে দেওয়ার প্রতারণা।
আপনাকে এমন স্বপ্নও দেখাবে আজ এত টাকা দিয়ে ঘুমাতে যান, কাল সকালে আপনি মিলিওনিয়ার হয়ে যাবেন।
আর রাতারাতি বড়লোক হওয়ার স্বপ্ন প্রায় প্রতিটা মানুষের মধ্যেই আছে সেক্ষেত্রে আপনার থাকাটাও স্বাভাবিক।
বিভিন্ন সময় প্রতারনামূলক বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে আপনার মতো, আমার মতো মানুষকে আকৃষ্ট করাই তাদের কাজ।
আউটসোর্সিং করে অনলাইনে আয় করার সেরা যুক্তিটিই তুলে ধরবে আপনার কাছে, এইসব মনকাড়া বিজ্ঞাপনে আকৃষ্ট হয়ে প্রতারিতও হচ্ছে প্রতিদিন নানান শ্রেনী পেশার মানুষ।
সত্য বলতে... আউটসোর্সিং শব্দটি এখনো আমাদের কাছে অতি পরিচিত নয়।
বর্তমানে অসাধু ব্যক্তিদের কল্যাণে, বাহারি বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে যেমন নানা কৌতুহলের জন্ম হচ্ছে ঠিক একই ভাবে প্রতারিত হওয়ার পর মানুষ প্রযুক্তির উপর বিশ্বাস হারাচ্ছে যা মোটেও সুখকর নয়।
কিন্তু বর্তমান বাস্তবতায় আউটসোর্সিং বিশ্বের এক অনন্য স্থান দখল করেছে যা খুবই সুখবর।
আমাদের দেশে আউটসোর্সিং নিয়ে প্রতারনার নানান কৌশল অবলম্বন করা হয়- যা আমি আগেই একটি পোস্টে বিস্তারিত আলোচনা করেছি আপনারা চাইলে পড়তে পারেন।
আউটসোর্সিং করে সাফল্য
আউটসোর্সিং করে সাফল্য অর্জন করতে চান- তার আগে আপনাকে জ্ঞান অর্জন করতে হবে।
অন্যতায় উপরে বিস্তারিত আলোচনা করেছি এর মধ্যেই পড়ে যাওয়ার সম্ভাবনাই বেশি থাকবে প্রতারনার শিকার না হলেও সাফল্য অর্জনে নিশ্চিত ব্যর্থ হবেন - তাই আগে সঠিক জ্ঞান অর্জন করুন।
বর্তমান সময়ে আউটসোর্সিং এর কাজ যেমন হয় অতীতেও আউটসোর্সিং ছিলো।
শুধু তার সঠিক ব্যবহারের পথটি ছিলো অচেনা, এখনকার মতো এতো সহজ ছিলোনা।
প্রতিযোগীতামূক বিশ্বায়নে প্রযুক্তির তুলনা অতুলনীয়, আর্থ-সামাজিক অস্তিরতার কারনে
বেকার সমস্যা ক্রমেই তুলনামূলক ভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে।
যেকারণে বেকারত্বের পাশাপাশি অল্প আয়ের মানুষগুলো বিকল্প আয়ের পথ বেছে নিচ্ছে।
এরই ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশে আউটসোর্সিং শব্দটি তুমুল জনপ্রিয়তা পেয়েছে, এবং ভবিষ্যতেও এর ধারাবাহিকতা থাকবে এমনটি আশা করা যায়।
কিন্তু আউটসোর্সিং করে আসলেই কি সাফল্য অর্জন করা যায়।
এর উত্তর হলো সাফল্য অর্জন করা যায় কিন্ত, আপনাকে পর্যাপ্ত প্রস্ততি নিতে হবে অন্যতায় নয়।
আপনি নিশ্চয়ই কোথাও না কোথাও দেখেছেন অতি বাহারি বিজ্ঞাপনে অনলাইনে হাজার হাজার ডলার ইনকাম করা যায়।
ঠিক আছে এবার আপনি একটু গভীরভাবে চিন্তাভাবনা করুন, এতই ইনকাম যেহেতু তাহলে পৃথিবীর সকল মানুষ আউটসোর্সিং এর সুবিধা নিচ্ছে না কেন।
দিন রাত এত পরিশ্রমের কি প্রয়োজন সামান্য একটি কম্পিউটার ও ইন্টারনেটের কালেকশন নিয়ে ঘরে বসে পড়লেই তো পারে।
কিন্তু বিষয়টা ঠিক এইরকম না, এর ফিছনে প্রচুর কর্ম ভিত্তিক দক্ষতা প্রয়োজন।
খুব সহজেই আমাদের দেশে শুনতে পাওয়া যায়, মাত্র ১-২ ঘন্টা কাজ করে এত এত ডলার আয় করুন।
কিন্তু বাস্তব চিত্র বলে ভিন্ন কথা, আউটসোর্সিং শুরু করার আগে আপনাকে চিন্তা করতে হবে অনলাইন কেন আপনাকে টাকা দিবে।
আর এর অর্থ যদি আপনি বুঝতে পারেন, ঠিক তখনি অনলাইন প্লাটফর্ম আপনার জন্য প্রযোজ্য স্থান।
একজন অদক্ষ মানুষের চাইতে, দক্ষ ও প্রশিক্ষিত মানুষ যেকোনো সেক্টরে সাফল্য অর্জন বা প্রফেশনাল ক্যারিয়ার গড়তে পারে।
আর আউটসোর্সিং প্লাটফর্ম হচ্ছে স্বাধীন পেশা, যা অন্য যেকোনো সেক্টরে পাবেন না।
অনলাইন প্লাটফর্মে আপনার দক্ষতার যথাযথ মূল্যায়ন ও সম্মানী পাবেন।
কারও অধিনে কাজ করতে প্রতি মহুর্তে জবাবদিহির মধ্য কাটাতে হয়।
কিন্ত অনলাইন প্লাটফর্মে এরকম কোনো আচরণের সম্মুখীন হতে হয় না, অনলাইনে আপনার কাজের উপর মূল্যায়ন করে অর্থনৈতি লেনদেন হয়।
অনলাইনে বেস্ট ক্যারিয়ার গড়তে প্রথমেই দক্ষ ও মনোযোগী হতে হবে এবং অনলাইনে কাজ করার নির্দিষ্ট প্লাটফর্মে আসতে হবে।
আউটসোর্সিং বা ফ্রিল্যান্সিং হল মুক্ত ও স্বাধীন পেশা যেখানে কাজের উপর নিয়মনীতি আরোপ করা হয় না।
বিভিন্ন প্রতিষ্টান টাকার বিনিময়ে দ্রুত তম সময়ের মধ্যে আউটসোর্সিং এর মাধ্যমে কাজ করিয়ে নেয় এবং প্রতিষ্টানের নিজস্ব কর্মী ব্যতিত প্রযুক্তির সাহায্যে ফ্রিলেন্সার হায়ার করে প্রযোজনীয় কাজ করিয়ে নেওয়াকেই আউটসোর্সিং বলে।
আর যারা অনলাইনে এসব কাজ করে তাদেরকেই ফ্রিলেন্সার বলে।
এখন আউটসোর্সিং করার জন্য আপনাকে কি কি প্রস্ততি নিতে হবে
ধরুন আপনি কোনো একটি মার্কেট প্লেসে কাজ করবেন, আপনাকে আগে জানতে হবে ঐ মার্কেট প্লেসে কি ধরনের কাজ হয় এবং কাজের বিট কেমন।
এখন কথা হলো মার্কেট প্লেস তো ঘুরে আসলেন ও আউটসোর্সিং করার জন্য কি কি কাজ জানতে আপনি নিশ্চয়ই ক্লিয়ার।
আর যদি ক্লিয়ার হতে না পারেন (নতুনদের ক্ষেত্রে) আমি কিছু কাজের নাম বলে দিচ্ছি, যেগুলো আপনি পারলে বা শিখে নিলে অনলাইনে আউটসোর্সিং করে ক্যারিয়ার গড়া সহজ হবে।
যেমনঃ ওয়েব ডিজাইন, ওয়েব ডেভেলপমেন্ট, গ্রাফিক্স ডিজাইন এই ক্যাটাগরির কাজের চাহিদা যেমন অনলাইন মার্কেট প্লেস গুলোতে থাকে সেই সাথে অফলাইনে কাজ করে উপার্জনের সুবিধা রয়েছে।
সফটওয়্যার ডেভেলপমেন্ট ও নেটওয়ার্কিং তথ্যব্যবস্থা
আপনি যদি লক্ষ্য করেন, তাহলে নিজেই বুঝে নিতে পারবেন সফটওয়্যারের ভূমিকা কত গুরুত্বপূর্ণ এবং এ দুটি ক্যাটাগরি আপনাকে সাফল্যের পথে এগিয়ে নিতে ও অনলাইন বা অফলাইন যেকোন স্থানেই গড়ে নিতে পারবেন সেরা প্রফেশনাল ক্যারিয়ার।
এছাড়াও রয়েছে ডিজাইন ও মাল্টিমিডিয়া, লেখা ও অনুবাদ, গ্রাহক সেবা, বিক্রয় ও বিপণন সেবা ইত্যাদি।
আপনি অনলাইন বা অফলাইন যেকোনো প্লাটফর্মেই গড়তে পারেন ক্যারিয়ার, তার আগে আপনাকে যে কোনো একটি অথবা একাধিক ক্যাটাগরিতে উচ্চ জ্ঞান সম্পন্ন হতে হবে এবং অনলাইন থেকে আয় করতে পারবেন।
আউটসোর্সিং জগতে এছাড়াও রয়েছে ভিন্ন ভিন্ন কাজ, যা করে আয় করতে পারবেন।
আউটসোর্সিং এ সতর্কতা
উপরেও এ নিয়ে আলোচনা করেছি এখনো বলছি কাজ না জেনে, কোনো অসাধু ব্যক্তির পাল্লায় পড়ে লোভনীয় অফার গ্রহন করে এ কাজে আসলে নিশ্চিত ধরা খাবেন।
শুধুমাত্র তারাই আউটসোর্সিং জগতে সাফল্য অর্জন করতে পারবে, উপরে উল্লেখিত কাজের জ্ঞান যার মধ্যে আছে।
আর নতুনদের উদ্দেশ্যে বলছি যারা আউটসোর্সিং জগতে প্রবেশ করতে চাও,
অবশ্যই ভালো কোনো প্রতিষ্টান থেকে যেকোনো একট বা দুটি বিষয়ে উন্নত প্রশিক্ষণ গ্রহন করে তার পর মার্কেট প্লেসের উদ্দেশ্য রওনা হও, কিন্তু তার আগে নয়।
তোমার মধ্য যখন পর্যাপ্ত জ্ঞান থাকবে - তখন ভেবে নিও তোমার জন্য, তোমার প্রফেশনাল ক্যারিয়ার অপেক্ষা করছে।
দক্ষতা ছাড়া যেমন কোনোকিছুই সম্ভব না, ঠিক দক্ষতা ছাড়া অনলাইনে সফল হওয়ার প্রশ্নই আসে না।
আউটসোর্সিং কেন করবেন ও কিভাবে?
বিশ্বের সকল দেশেই অনলাইনে কাজ করার বহুজন রয়েছে।
তবে সকলেই সফলতার ছোয়া পায় না, মনে রাখা প্রয়োজন ফ্রিলেন্সিং একটি মুক্ত পেশা।
এখানে সাধারণ কাজের চেয়ে অসাধারণ কাজের মূল্য অনেক বেশি, একজন ক্লায়েন্ট তখনি আপনাকে হায়ার করবে যখন আপনার কাজে অন্যদের তুলনায় ভালো ফলাফল পাবে।
উপার্জন করার জন্যই তো আপনি আসবেন অনলাইন প্লাটফর্মে, আর এখানে যারা আপনাকে কাজ দিবে তারা হলো আপনার ক্লায়েন্ট এবং ক্লায়েন্ট অবশ্যই তার প্রয়োজন অনুযায়ী কাজ করিয়ে নেওয়ার জন্য আপনাকে অর্থ প্রদান করবেন।
এখন ধরুন আপনি কাজ অর্ধেক করে এবং বাকী অর্ধেক করেননি বা করতে পারলেন না তাহলে ক্লায়েন্ট কেন আপনাকে অর্থ প্রদান করবে।
কাজের প্রতি যদি আপনার মনোযোগ না থাকে, আপনার কাজে যদি ক্লায়েন্ট বিরক্তিকর পরিস্থিতিতে পড়ে তাহলে মনে রাখুন আপনি অনলাইনে কখনোই সফল হতে পারবেন না।
নিজের দক্ষতার মূল্যায়ন ও বিশ্লেষণ করুন
এখন আপনি অনলাইনে যে কাজটির জন্য বিট করলেন উদাহরণ কাজটি আপনি পেলেন।
আপনি একই কাজ অন্যজনের কাছ থেকে করাবেন- এখন কাজের ফীডব্যাক কেমন আশা করেন বা করবেন।
আমি মনে করি অবশ্যই ভালোটাই আশা করবেন।
তাই কোনো ক্লায়েন্ট যখন আপনাকে কাজের জন্য মনোনীত করবে, চেষ্টা করবেন তার চেয়েও ভালো কিছু দেওয়ার।
আর আপনার ক্লায়েন্ট যদি, আপনার কাজে খুশি থাকে, অনলাইনে সাফল্য অর্জন ও কাজ পাওয়ার সম্ভাবনা যেমন বাড়ে সেই সাথে নিজের ক্যারিয়ারও সাকসেসফুল হয়।
একজন সফল ফ্রিলেন্সার হিসেবে সাকসেস হওয়ার জন্য প্লাটফর্ম নির্বাচন সঠিক ও স্থায়ী হতে হবে।
আমি কয়েকটি ওয়েবসাইট সাইটের ঠিকানা নিচে উল্লেখ করেছি যা দীর্ঘস্থায়ী ও সঠিক প্লাটফর্ম।
উল্লেখ্যঃ- প্রচুর ভুয়া ওয়েবসাইট রয়েছে যা থেকে দুরত্ব থাকার অনুরোধ রইল।
আন্তর্জাতিক ও নির্ভরযোগ্য আউটসোর্সিং ওয়েবসাইটের ঠিকানা দেওয়া হলো—
সব কয়টি ওয়েবসাইট একই ক্যাটাগরির তাহলে কিভাবে বুঝবো কোনটি আসল কোনটি নকল অনেকের মধ্যেই এই কনফিউশনটি কাজ করে।
এখন কথা হলো প্রযুক্তি খাতে আসলের চেয়ে নকলের সংখ্যা বেশি কথাটির যথাযথ যুক্তি আছে।
তাই নকলের লিষ্ট দেওয়া সম্ভব নয়, তাই কার্যকরী কয়েকটি সাইটের ঠিকানা দেওয়া হলো।